‘অন্ধ’ নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে রক্ষার কাজে নিয়োজিত সব সময়, সরব বিরোধীরা

গত কয়েক বছরে ভারতের নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষ তার বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে সব ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে বিজেপির সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি এবং কর্মকান্ড পরিচালনা করতে। ২০১৯-‌এর লোকসভার আগে যেভাবে সাম্প্রদায়িক প্রচার চালানো হয়েছিল এবং তা নিয়ে পক্ষপাতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের দ্বারা আচরণবিধি মডেল আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে যেভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা, তারপরে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তৎকালীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে ক্লিন চিট দিয়েছিল কমিশন। 

এরাজ্যে এসে একটি নির্বাচনী সমাবেশে তৃণমূল নেত্রীর একটি ভাষণকে উল্লেখ করে আক্রমণ শানান মোদি। তিনি বলেন, ‘‌মমতা বলছে সব মুসলমানদের একজোট হওয়া দরকার। তাদের ভোট বিভক্ত হতে দেওয়া উচিত নয়’‌। ওই কিন্তু মমতার ওই ভাষণ সম্পূর্ণ শুনলে দেখা যাবে যে, তিনি হিন্দুদেরও অনুরোধ করেছিলেন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ক্ষমতায় না আনতে। কিন্তু নিজের চিরপরিচিত ভঙ্গিমায় এবং সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে মমতার বক্তব্যের সেই অংশটিকে ইচ্ছা করে উপেক্ষা করেছিলেন মোদি। পাশাপাশি মোদি বলেছিলন, ‘‌যদি আমি হিন্দুদের বলি একজোট হও তবে কমিশন নোটিশ পাঠিয়ে দিত’‌। মোদির কথামতো নির্বাচন কমিশন মমতাকে কেন্দ্র করে জনসভা থেকে এই বক্তব্যের পরপরই মমতাকে আইনি নোটিশ দেয় কমিশন। কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এবং নির্বাচন কমিশন বারবার নিষেধ করলেও জয় শ্রীরাম থেকে শুরু করে পাকিস্তান, জিহাদী, রাম মন্দির, লাভ জিহাদ ইত্যাদি সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বিষয়গুলির নিত্য ব্যবহারকারী মোদি এবং তার দলের নেতারা সব সময়ে নির্বাচন কমিশনের সুশীতল আশ্রয় লাভ করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ নির্বাচন কমিশন ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু এবং অবাধ করার জন্যই বিজেপির স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্যই নিয়োজিত রয়েছে। আর এমন অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকেও কানাঘুষো শোনা যায়। এমনকি একই রকম কারণেই গত লোকসভা নির্বাচনের পর ইস্তফা দেন নির্বাচন কমিশনার।

এছাড়াও বাংলায় যেমন তৃণমূল নেতার বাড়িতে উদ্ধার হয়েছিল ইভিএম-‌ভিভিপ্যাট, তেমনই অসমে এক বিজেপি নেতার গাড়ি থেকে ইভিএম মেলে। বাংলায় সেই তৃণমূল নেতা সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল কমিশন। কিন্তু অসমে ওই বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু পালের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি কমিশন। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগে কমিশন ‘‌অন্ধ’‌ বলে দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। 
অসমে বিপিএফ-‌কংগ্রেস জোট হয়েছে। তমালপুরে বাসুমাতারিকে প্রার্থী করেছিল বিপিএফ। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু তারপরেই জোটের তরফ থেকে দাবি করা হয়, ভোট স্থগিত রাখার। কিন্তু কমিশন স্পষ্ট জানায়, বাসুমাতারি নিজের ইচ্ছায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এই নিয়ে স্বয়ং রাহুল গান্ধী কমিশনকে কটাক্ষ করে ইলেকশন ‘‌কমিশন’‌-‌এর কমিশনকে উদ্ধৃত করে টুইট করেন। সাম্প্রদায়িক উস্কানি থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা, কমিশনের বিরুদ্ধে বারংবার পক্ষপাতের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল সহ সমস্ত বিরোধীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top