কিসের অভাবে শান্তিহীন অর্থ ও জনপ্রিয়তায় ভরা মানব জীবন ?

সাইফুল্লা লস্কর :  মানুষ জীবনের অর্থ বুঝতে নিজেকে যাদের সাথে তুলনা করে, যাদের পথচলা দেখে নিজেকে হীন বলে অনুভব করে তাদের জীবন কী সত্যিই ঈর্ষার যোগ্য নাকি না? তাদের ঐশ্বর্য কী সত্যিই সর্বোচ্চ সুখের ঠিকানা? যদি হয় তবে তাদের মধ্যে কারো কারো জীবনের সমাপ্তি কেন অপত্যাশিত ভাবে ঘটে?

একটু আগের খবর, বলিউড তারকা সুশান্ত সিং রাজপুত গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে হঠাৎই নিজের ঘরে চলে যান তিনি। অনেক ক্ষন পরেও ফিরে না আসায় তাকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তার বন্ধুরা দরজা ভেঙে ভিতরে সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়।

এছাড়াও এর আগে বহুবার দেখা গেছে এমন ঘটনা। বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা রবিন উইলিয়ামস যার সারাটা জীবন মানুষকে হাসি আনন্দ দিয়ে কেটেছে তিনিও আত্মহত্যা করেছিলেন। ফানি শো মীরাক্কেল-এর উপস্থাপক মীর আফসার একবার দুইবার নয়, চার চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এভাবেই নিজের জীবনের ইতি টেনে ছিলেন বিশ্ববইখ্যাত লিনকিন পারক ব্যান্ড এর গায়ক চেস্টার বেনিঙটন। এছাড়া আরো অনেক অভিনেতা, অভিনেত্রী, গায়কও নিজের জীবনকে মূল্যহীন ভাবে বিসর্জন দিয়েছেন।

কিন্তু প্রশ্ন হল যাদের জৌলুস, ঐশ্বর্য, আতিশয্য সাধারণ মানুষকে ঈর্ষান্বিত করে তাদের শেষ পরিণতি কেন এত করুন। কীসের অভাব ছিল এইসব সেলিব্রেটিদের? অঢেল অর্থ, তুমুল জনপ্রিয়তা, জীবন উপভোগের সকল উপকরণ ছিলো তাদের। তা সত্ত্বেও কেন তারা নিজেদের জীবন নিয়ে এতটা উদসীন হয়ে পড়েছিলেন??

বিখ্যাত ইমাম হাফিজ ইবনুল ক্যায়িম রাহিমাহুল্লাহ্ আল কুরআনের আলোকে স্পষ্ট ভাষায় এর উত্তরে বলেন, “প্রকৃতপক্ষে অন্তরে রয়েছে এক অভাববোধ, যা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করা ব্যতীত দূর হয় না। অন্তরে রয়েছে এক বিষণ্ণতা, যা আল্লাহকে জানা আর তাঁর প্রতি সৎ থাকা ছাড়া দূরীভূত হয় না। অন্তরে আছে আরোও একটি বিশেষ শূন্যতা, যা আললাহকে ভালবাসা, তাওবাহ করে তাঁর দিকে ফিরে যাওয়া এবং সবসময় তাঁকে স্মরণ করা ছাড়া পূরণ হয় না। কোন ব্যক্তিকে যদি পুরো দুনিয়া এবং তার সবকিছুই প্রদান করা হয়, তবুও এটি তার শূন্যতা পূরণ করতে পারবে না।”
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন—‘‘জেনে রেখো, আল্লাহর স্মরণেই কেবল হৃদয়সমূহ প্রশান্ত হয়।’’ [সূরা রা’দ, আয়াত: ২৮]

Back To Top