সাইফুল্লা লস্কর : এবার বিনামূল্যে অনলাইনে পাওয়া যাবে ২৫০০ এরও বেশি দুষ্প্রাপ্য এবং প্রাচীন ইসলামিক বই। নবম শতক থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত রচিত হওয়া এই সব বই গুলি বিনামূল্যে অনলাইনে জনসাধারণের জন্য উপলব্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে ইসরাইলের জাতীয় লাইব্রেরী।
স্বর্ণ পত্র এবং ল্যাপিস লজুলি দ্বারা সাজানো অপূর্ব সুন্দর কুরআন শরীফের হস্তলিপি সহ নবম থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যে লেখা আরবী, ফারসি এবং তুর্কি ভাষার বিভিন্ন ইসলামী হস্তলিপি গুলোর ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করছে ইসরাইলের জাতীয় লাইব্রেরী।
তাদের সংগ্রহের মধ্যে আছে ১৪৮৪ খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত ফারসি কবি নুর আলদিন জামির রচিত একটি হস্তলিপি “তুহফুত আল আহরার”
জাতীয় লাইব্রেরির ইসলাম ও মধ্যে প্রাচ্য বিষয়ক সংগ্রহের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাকেইল উকেলেস বলেছেন, ” এই কাজগুলো খুব সুক্ষ্ম।এর প্রত্যেকটি কিনারা স্বর্ণ পত্র এবং পেইন্টিং দিয়ে সাজানো। প্রত্যেকটি পাতা ভিন্ন রকমের। সব জায়গায় হরিণ, ফুল এবং বৃক্ষের ছবি দেখতে পাবেন।” তিনি আরো বলেন, ” আপনি এর ডিজিটাল ভার্সনে এর অনেক কাছে যেতে পারবেন এবং এর অনন্য এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য উপলব্ধি করতে পারবেন যা আপনি কোনো বিবর্ধক কাঁচ দিয়েও পারবেন না।”
তাদের ব্যতিক্রমী সংগ্রহের মধ্যে আছে একটি দশম শতাব্দীর একটি ক্ষুদ্র ৩৭×৬৮ মিলিমিটার মাপের কুরআন শরীফ। উকেলেশ বলেন, “এটি পড়ার জন্য তৈরি হয়নি বরং মাদুলির মতো ধর্মীয় নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হতো। এটি ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে একটি অটোম্যান সৈনিক ভিয়েনা অভিযানের সময় নিয়ে যান কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়ায় এটি অস্ট্রিয়ার সৈন্যরা নিয়ে যায় এবং ১৯ শতকে আবার তুর্কিদের কাছে ফিরে যায়।”
এই গ্রন্থগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ দান করেছিলেন জেরুজালেমে জন্ম নেওয়া আরব ইয়াহুদি স্কলার এবং ইসলামিক সংগ্রাহক আব্রাহাম শ্যালোম যিনি মারা যান ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে।
উকেলেস বলেন, ” এটা আমাদের জন্য নতুন একটা সূচনা, অবশ্যই আমরা একটা স্পর্শকাতর ভূমিতে বাস করি যেখানে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমাদের খুব বেশি যোগাযোগ হয় না। কিন্তু ইসলামিক সংগ্রহের মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য হলো এমন একটি জায়গা তৈরি করা যেখানে শারীরিকভাবে হোক বা অনলাইনে হোক তারা একত্রে নিজদের বিশ্বাস এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে পড়াশুনা করতে পারে এবং রাজনৈতিক স্তরে যাই হোক নিজেদের দিগন্ত উন্মুক্ত করতে পারবে।”