তুহিনা পারভিন
“মোরা হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই
যুদ্ধ নয় সম্প্রীতি চাই
তুলবো মোরা জয়ের ধ্বনি
করবো নাকো খুনোখুনী”
সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, ও গণতান্ত্রিক দেশ হলো ভারতবর্ষ। এখানে বহু ভাষাভাষী, তথা জাতি উপজাতি এবং বিভিন্ন ধর্মের ও বর্ণের মানুষের বাস। ডক্টর বি আর আম্বেদ কর এর রচিত সংবিধান এর প্রস্তাবনা অনুযায়ী এ দেশে প্রত্যেকটি নাগরিক যথা হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, ধনী গরীব, উচ্চ নীচ, নারী পুরুষ, দলীত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে এবং তাদের নিজস্ব চিন্তা ও মত প্রকাশের দাবি রাখে।
কিন্তুু আজ অতি দুঃখের সহিত বলতে হয়, কিছু শ্রেণীর মানুষ (দাঙ্গাবাজ,দুষ্কৃতী) ক্ষমতালাভের লোভে পড়ে সেই সংবিধান কে মান্যতা দিচ্ছে না।
বর্তমান পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টিপাত করে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত আমরা আজ উপলব্ধি করতে পারছি। যেভাবে সারা দেশ জুড়ে অসংখ্য খন্ড জাতিয়তাবাদী সংঘাত, জাতপাতের বিভাজন, অর্থনৈতিক শোষণ, দুর্নীতি, সামাজিক অবিচার, নারী ধর্ষণ, নির্যাতন, রাষ্ট্রিয় ও দলীয় সন্ত্রাস, সন্ত্রাসবাদীদের দৌরাত্ম্য, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পে সমাজ কুলোষিত হচ্ছে দেশের জনসাধারণ বিশেষ করে সংখ্যালঘু তথা আদিবাসী ও দুর্বল গরীব মানুষের জীবন কে দুর্বিষহ করে তুলছে।
এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য কোনো কিছুতেই সাধারণের নায্য অধিকার কে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে না, নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না।
এমতাবস্থায়, ধর্মীয় সহিংসতা আজ আমাদের দেশের উন্নয়নে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ধর্মীয় সম্প্রীতির বিকল্প কিছু নেই। দেশকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এক সহযোগে কাজ করতে হবে। তাই কোনরকম হিংসা বিদ্বেষ নই বরং শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা প্রেরণ করতে হবে।
কেবল নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন না করে মানবমুক্তি তথা মানব কল্যাণে প্রত্যেককে নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে।