দিনকাল গ্রাউন্ড টিম, জঙ্গিপুরঃ লোকসভা ভোটের নির্ঘন্ট বাজার সাথে সাথেই জমে উঠেছে ভারতের ৫ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হওয়া সব থেকে বড় উৎসবের। পাবলিকের কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ভোট উৎসবে কার্যত সারা ভারত মজে থাকে। এবং নির্দ্বিধায় বলা যায় ভোট উৎসবই ভারতের সবথেকে বড় উৎসব। আর সেই ভোটের উত্তাপের আচ পেতে দিনকাল ডট ইনের পক্ষ থেকে চললো গ্রাউন্ড অভিযান।
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির লোকসভা কেন্দ্র জঙ্গিপুর। এক চরম দৃষ্টান্ত। রাস্তাঘাটের চরম দুর্দশা। ভারতের অর্থমন্ত্রী থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রণব মুখার্জির এই কেন্দ্র ঘুরলে প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক যে কিভাবে এত বড় একজন নেতার সংসদীয় এলাকা এতটা পিছিয়ে থাকতে পারে! তবে প্রশ্ন থাকলেও উত্তর কারো জানা নেই।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ অভিজিৎ মুখার্জি, প্রণবের ছেলে। তাকে তার এলাকার কাজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এমনকি শেষ ৫ বছরে একবারের জন্যও নিজের সংসদীয় এলাকাতেই আসেননি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জঙ্গিপুর সাংসদ একাকার মধ্যেই পড়ে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১১০ কোটি ফান্ড আটকে রেখে দিলেও একবারের জন্য সাংসদে মুখ খুলতে পারেননি তিনি।
আমাদের প্রতিনিধিরা এলাকাবাসীদের কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিল। নীচে সেগুলো দেওয়া হল,
উল্লেখ্য, জঙ্গিপুর, রঘুনাথগঞ্জ, বিলবোরা কোপরা, বিশ্বনাথপুর, চুয়াপুকুর, কাবিল্পুর, সুতি, লালগোলাসহ জঙ্গিপুর এলাকার বিস্তির্ণ এলাকা ঘুরে ঘুরে প্রশ্নগুলো করা হয়েছিল।
১) অভিজিৎ মুখার্জি সাংসদ হিসেবে কতটা সফল?
২) বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা কাকে ভোট দেবে?
৩) জঙ্গিপুর এলাকার লড়াইয়ে থাকা প্রার্থীদের ব্যাপারে তাদের কি মতামত?
৪) কোন নতুন দল যেমন ওয়েলফেয়ার বা এসডিপিআই কি সেরকম প্রভাব ফেলতে পারবে?
প্রশ্নগুলোর উত্তরে অভিজিৎ মুখার্জির ব্যাপারে এমন একজনকেও পাওয়া যায়নি যে খুশি। তবে বলেছে এই অবস্থায় হয়তো কংগ্রেসকেই ভোট দিতে হবে।
জঙ্গিপুরে মেইনস্ট্রিম দল কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও বিজেপির সাথে সাথে ওয়েলফেয়ার ও এসডিপিআই নামে দুটি দল লড়াই করছে।
কংগ্রেসের প্রার্থী অভিজিৎ মুখার্জি, সিপিএমের প্রার্থী জুলফিকার, বিজেপির মাফুজা খাতুন, তৃণমূলের খলিলুর রহমান, ওয়েলফেয়ারের এসকিউআর ইলিয়াস ও এসডিপিআই এর তায়েদুল ইসলাম লড়াই করছেন।
প্রার্থী সম্বন্ধে উত্তর দেওয়ার সময় অনেকেই একটু ডিপ্লোম্যাটিক উত্তর দিয়েছেন। গত পঞ্চায়েতে ভোট দিতে না পারার ক্ষোভও রয়েছে অনেকের মাঝে। বামফ্রন্টের কর্মীরা আশাবাদী জেতার ব্যাপারে। এর আগে দুবারই খুব ছোট মার্জিনে বামফ্রন্টের প্রার্থী পরাজিত হয়েছে।
বড় প্রতিষ্ঠিত দলগুলিকে ছাপিয়েও মাঝে মাঝেই আলোচনা উঠে আসল ওয়েলফেয়ার ও এসডিপিআই এর নাম। মেইনস্ট্রিম দলগুলোর পরে এসডিপিআই সবথেকে বেশি শক্তিশালী দল এই সংসদীয় এলাকায়। তাদের ক্যাডার বেসড দল ভালোভাবেই প্রচার শুরু করেছে বলে জানাল অনেকেই। এছাড়াও জঙ্গিপুর এলাকায় ছোটবড় সবরকম কাজের এসডিপিআই এর লোকজনকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় বলে জানাল অনেকেই।
অনেকেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানিয়েছেন এখানে যদি ওয়েলফেয়ার প্রার্থী না দিয়ে এসডিপিআই কে সমর্থন করত তাহলে হয়তো ভালো রেজাল্ট দিত এসডিপিআই এবং সমর্থন অনেক বেশি পেত মানুষের।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনে জঙ্গিপুর থেকে ভালো ফল করেছিল এসডিপিআই। তাদের ক্যাডার বেসড সংগঠন সেভাবে ভোট কমেনি উপনির্বাচনের নিরিখে। সেদিক দিয়ে নিকৃষ্ট ফল হয়েছিল ওয়েলফেয়ারের। ওয়েলফেয়ার ২০১২ সালের উপনির্বাচনে পাওয়া ৪০ হাজার থেকে ২০১৪ তে ৯ হাজারে নেমে আসে।
জিতবে কে সেতো ফলাফলের দিনেই বোঝা যাবে, তবে এই নির্বাচনে অন্যান্য দলগুলোর সাথে সাথে এসডিপিআইও তার ছাপ রাখতে চলেছে চলেছে বলে মতামত এলাকাবাসীর। দেশের পরিস্থিতি আরেকটু ভালো থাকলে আরো ভালো ফলাফল করার সুযোগ ছিল বলে জানিয়েছে তারা।