পিটিয়ে হত্যা নদিয়ায়! বেরিয়ে আসলো তথ্য

দিনকাল ডেস্কঃ নদিয়ার পলাশীতে ৩০ বছরের জাকির হোসেনকে পায়রা চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হল। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৬ নভেম্বর সোমবার দিনগত রাত্রে পলাশীর মিরা ১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর রাজয়ার পাড়ায়। ২৭ তারিখ মুর্শিদাবাদ  মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। জাকিরের পিতা হালিম সেখ নির্দিষ্ট কয়েকজনের নামে কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। জাকিরের বাড়ি ঐ অঞ্চলের পাঁচখেলা গ্রামে। সে ভুষিমালের ব্যবসা করত। তার শ্বশুর বাড়ি গোবিন্দপুর। তার দুটি শিশু পুত্রসন্তান আছে। প্রথমটি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।  দ্বিতীয়টি স্কুল যাওয়া শুরু করেনি। সোমবার বিকেলে জাকির শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিল। রাত্রি বেলায় সে গিয়েছিল শ্বশুর বাড়ির পাশের পাড়ার রাজুদের বাড়ি। সেখানেই তাকে পিটিয়ে পিটিয়ে মৃতপ্রায় করা হয়। তার পিতার থানায় লিখিত বয়ান অনুযায়ী জাকিরের পায়রা পোষার শখ ছিল। একটি পায়রা তার হারিয়ে গিয়েছিল। সে ঐ পায়রাটি খোঁজার জন্য রাজুদের বাড়ি গিয়েছিল। সেখানেই তাকে গাছে বেঁধে বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে মারা হয়।

যারা বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে জাকিরকে গণপ্রহার করেছে  বলে জাকিরের পিতা থানায় লিখিত জানিয়েছেন তারা হল তেঁতুল রাজয়ার পিতা সদানন্দ রাজয়ার, রাজু রাজয়ার পিতা তেঁতুল রাজয়ার, ভানি রাজয়ার স্মামি মদন রাজয়ার, মদন রাজয়ার পিতা হারাধন রাজয়ার , কালু রাজয়ার পিতা বথিকান্ত রাজয়ার, সরস্বতী রাজয়ার স্মামি  রবি রাজয়ার, গোপাল রাজয়ার পিতা মহাদেব রাজয়ার, সঞ্জিত রাজয়ার পিতা কালু রাজয়ার,উত্তম হালদার পিতা গৌড় হালদার, জয়দেব রাজয়ার পিতা ভদ্রেশ্বর রাজয়ার। 

অঞ্চলের উপপ্রধান লালটু রহমান জানান সোমবার দিনগত  রাত্রি ২ টায়  জাকিরের বাবা আমাকে ফোন করে বলে জাকিরকে ঘরে ভোরে মারছে। আমরা গিয়েছিলাম। আমাদেরকেও আক্রমণ করবে এই ভয়ে পালিয়ে এলাম। তখন আমি থানায় ফোন করে বলি। থানা প্রথমে মোবাইল পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলে। তারা সেখানে গেলে তাদেরকেও গালিগালাজ । তারপর বড় বাবু বাহিনী নিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে রাত ৩ টে নাগাদ মিরা প্রাথমিক  চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করি। ভর্তি করার ঘণ্টা দুয়েক পরেই সেখানেই মারা যায়। তিনি আরও জানান মিরা হাসপাতাল থেকে আম্বুলান্সে যাওয়ার সময় থেকে আমি তার সাথে ছিলাম। আম্বুলান্সে সে কথা বলছিল। তার সমস্ত শরীরে কাঁটার চিহ্ন ছিল। কাঁটা জায়গায় নুন ছিটিয়ে দিয়েছিল। গলার পিছন দিকে স্পাইনাল কর্ড কেটে দিয়েছিল। পঞ্চায়েত সদস্য চিনটু সেখ বলেন জাকিরের কবুতর পোষার শখ ছিল। যাদের বাড়িতে তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে তাদেরও এই শখ আছে বলে শুনেছি। কবুতর নিয়েই ঐ রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা মারামারিতে রুপ নেয় । কিন্তু অবস্থা এই পর্যায়ে যাবে ভাবতে পারছি না । ঘণ্টা দুয়েক ধরে তাকে ঐ বাড়িতে মারা হয়। এমন ভাবে মারা হল সে মারাই গেল। এলাকার লোকজনের কথা শুনে বোঝা গেল পুলিশ তৎপরতার সাথে কাজ করেছে।  বাড়ির মহিলারা বাইরের লোকের সাথে কথা বলতে চাইনি। জানা গেছে রাজুদের বাড়ির কোন একজন প্রতিবেশীই ফোনে জাকিরের বাবাকে জানায় তোমার ছেলেকে এ ভাবে মারা হচ্ছে । উদ্ধার করে নিয়ে যাও।

 

Back To Top