দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে প্রবল শক্তিশালী আমফান, কতটা প্রস্তুত রাজ্য সরকার?

ছবি প্রতীকি।

সাইফুল্লা লস্কর : দ্রুত বাংলার দিকে এগিয়ে আসছে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান। দিঘা থেকে প্রায় নয়শো কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বুধবার বিকেল বা সন্ধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আমফান দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়া উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। তাই ঘূর্ণিঝড় এর কারণে ক্ষয়ক্ষতি সামাল দিতে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। দিঘা সহ সমস্ত উপকূলীয় এলাকায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সতর্কতামূলক প্রচার। পৌঁছেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যত্র। মৎস্যজীবীদের সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সুন্দরবন অঞ্চলের সমস্ত উপকূলীয় এলাকা থেকে মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরে হওয়ার জন্যে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং চলছে। বিচ্ছিন্ন ঘোড়ামারা দ্বীপ থেকে মানুষজনকে মূল সাগর ভূখণ্ডে সরিয়ে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও কাকদ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা ও নামখানা ব্লকের প্রত্যন্ত উপকূল এলাকার মানুষজনকেও বিপদের আশঙ্কায় নিরাপদ দূরত্বে ফ্লাডসেন্টার এবং স্কুলবাড়িগুলিতে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। তাঁদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণসামগ্রীও মজুত করা হয়েছে। পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এনডিআরএফ টীমকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, ডায়মন্ড হারবারে খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। উপকূল রক্ষীকে বাহিনীকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

ডায়মন্ড হারবারের সহ মৎস্য অধিকর্তা (মেরিন) জয়ন্ত প্রধান জানিয়েছেন, নদী বা সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী মৎস্যজীবীদের অবিলম্বে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় দেওয়ার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নদীতে নৌকা, ট্রলার এমনকি যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচলের উপরেও জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ছোট নৌকা নিয়ে নদীতে বা সুন্দরবনের খাঁড়িতে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। আয়লা ও বুলবুল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের অস্থায়ী ও অপোক্ত নদীবাঁধগুলির উপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। সেচ দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের যে কোনও পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবিলা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ঝড় পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলার জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের অগ্রিম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে যে ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক আকার ধারণ করতে পরে। উপকূলীয় এলাকার মানুষদের যেসব সাইক্লোন শেল্টারে বা স্কুলে রাখার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা একপ্রকার অসম্ভব তাই গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হতে পারে যার ফলে এই মহামারী আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Back To Top