“কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যু এক পরিকল্পিত খুন”, দাবি এপিডিআর-এর

কোচবিহার, ১৬ এপ্রিলঃ গত ১০ই এপ্রিল চতুর্থদফা দফা বিধানসভা নির্বাচনে ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যু এক পরিকল্পিত খুন, এমনই দাবি তুলেছেন এসোসিয়েসন ফর প্রটেকসন অফ ডেমোক্রেটিক রাইটস বা এপিডিআর।

গত ১০ ই এপ্রিল শীতলখুচি বিধানসভা পাঁচ জন গ্রামবাসীর খুন এবং কয়েকজন আহতের ঘটনায় তথ্য অনুসন্ধানের জন্য এপিডিআরের পক্ষ থেকে এগারো জনের একটি দল সেখানে পৌছায়। ২৮৫ এবং ১২৬ নং বুথে পৌঁছে তারা স্থানীয় গ্রামবাসী ও আহত-নিহতদের পরিবারের সাথে তারা কথা বলে তারা এমনই দাবি তুলেছেন।
এদিন এপিডিআর এর সহ সম্পাদক আলতাফ আহমেদ জানান, জাইরুল হক নামে ১৪ বছরের একজনকে রেসপন্স টিম এর উপস্থিতিতে মারধর করা হয়, সেই কারনে গ্রাম বাসীরা উত্তেজিত হয় কিন্তু সেই বিক্ষোভ কোনও মতেই বুথের একশ মিটারের মধ্যে পৌছায় নি। তিনি বলেন ক্যুইক রেসপন্স টিম যে নিজের আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালিয়েছিল তার কোনও প্রমান গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনায় পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান যে পুলিশ আগে থেকে কোনও সতর্কবার্তা ছাড়া এবং লাঠি চালানো, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ব্যবহার না করেই গুলি চালিয়েছিল, এমনকি প্রত্যেকটা গুলি কাছের থেকে বুক লক্ষ করে করে হয়েছে। একজন গ্রাম বাসীকে মাটিতে ফেলে বুকে পা দিয়ে গুলি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এপিডিআর এর সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রাহুল চক্রবর্তী জানান, বুথের মধ্যে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ পরিকল্পিত ভাবে সরানো হয়েছে। গুলি চালার জন্য এসওপি মানা হয়নি যাদের মারা হয়েছে তাদের মধ্যে দুজন পরিযায়ী শ্রমিক একজন কলেজ ছাত্র ও একজন গ্রামের লোক। শুধুমাত্র ভোট দেবার জন্য এরা এসেছে, এদের মারার অর্থ উপর থেকে আসা নির্দেশ তারা পালন করেছে। তিনি এই ঘটনার প্রকৃত কারন আনুসন্ধানের আর্জিও জানান।

সম্পাদক মণ্ডলীর আর এক সদস্য শঙ্কর দাস জানান, ৩০০ মিটার দূরে ১৪ বছরের একটা বাচ্চাকে পেটায় পুলিশ আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত হয় জনতা সে জন্য বুথে গুলি চালানোর কোনও দরকার নেই। তিনি আরও বলেন সেখানে এমন কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নি যার জন্য গুলি চালাতে হবে। তিনি জানান যে, একটা লোক পরে গেছে আর পুলিশ তার বুকের উপর পা রেখে গুলি চালাচ্ছে, কোনও গনতান্ত্রিক দেশে পুলিশকে এমন অধিকার দেয়া যায় না বলে তিনি দাবি করেন।

এছাড়াও তারা জানান, সেই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় সেখানে কোন রকম সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছিল না। বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজতে সবাই অংশ নিত বলে জানা যায়। তারা এও জানতে পারে যে সেখানে ৩০০-৩৫০ লোক মিলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অস্ত্র সস্ত্র কেরে নেওয়ার চেষ্টা করেছে সেটাও মিথ্যে, অর্থাৎ আত্ম রক্ষার জন্য গুলি চালানোর রটনা পুরপুরি মিথ্যা।
তারা সেই কুইক রেসপন্স টিম যারা এই ভাবে গুলি করে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করে আবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। তারা আরও জানান ২৮৫ নম্বর বুথে যে ঘটনা ঘটেছে সেখানেও নির্বাচন কমিশন তদন্ত করুক ও দোষী দের শাস্তির ব্যাবস্তা করুক। এছাড়াও তারা মৃত পরিবার গুলিকে ২০ লক্ষ ও আহত পরিবার গুলিকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরনের দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top