কবিতাঃ ডাইনি মা

ডাইনি মা

~উমর ফারুক

শুকনো এক দুপুরের
মধ্যহ্নভোজনে হয়ত আমি বিছানায়,
গা টা ঢাকা দিয়েছিলাম….
কিছু সময় বিনোদনের ডুবে
আমার আত্মীয়র সাথে–
দেশ বিদেশ, স্রষ্টার কিছু নিদর্শন বর্ণনা,
প্রিয়তম খালুর শেষ কৃত্য,
দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থেকে শেষ পরিনতির-
শেষ নিশ্বাষ ত্যাগের কথা,
শব দেহের উপর বয়ে য়াওয়া ঝড়,
আরও কত কি!
বাক্যগুলোয় আমার হৃদয়ে —
রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়..
লম্বা এক শ্বাস নিয়ে বিছানা নিই।।
হঠাতই যখন তোমাকে নিয়ে
পাড়ায় সোরগোল পাকে…
সারা মহল্লা তোমাকে নিয়ে পড়েছিল বিপাকে।।
এমন সময় আমারও ঘুম ভাঙে…

খুব বেশি দুরে নই!
বেড়ার সেই পিছনে তোমার রক্ত মাখা
আধখাওয়া মাথা–
শয়ে শয়ে মানুষের রক্ত ক্ষরন হয় হৃদয়ে।

কি সুন্দর চোখ তোমার!
যেন শত্রুদের বিনাশ করতে,
সঠিক পথের দিশা দেখাতে
সমাজের কান্ডারী হয়ে এই সুন্দর ভাবে,
তুমি চেয়েছিলে ফুল হয়ে ফুটতে’
পৃথিবীর আলো দেখবো বলে,
সারা রাত তোমার ‘ডাইনি মা’র ‘গর্ভ ভেদ করে
দুনিয়ার আলো দেখলে ।
প্রস্ফুটিত আলো যে চিরকালের জন্য
আধারে ঢেকে যাবে, এক বারও ভাবো নাই তুমি।
ডাইনি মা তোমার।
পৈশাচিক আনন্দ ভোগ করতে তোমাকে
তোমার সুন্দর কোমল হস্তদ্বয় পিশে
কন্ঠ অবরোধ করে,খুন করিল।
তোমার আত্ম চিৎকার
ডাইনির কানে কি পৌছায়নি?

কেমন মা তুই…..
রক্তমাংসের দেহ তোর,
রক্তের গোলাপ টা ছিড়ে দিলি..!
কি দোষ ছিলো তার,তুই ভেবে দেখ একবার
পরিচয় না পাক সে তার পিতার..
হাজারও ঘর আছে আজ অন্ধকার
প্রজ্জ্বলিত বাতির করছে অপেক্ষা
লোকান্তরে শব দেহ কে লুকিয়ে রেখেছিস!!?

তুই কাপুরুষ – তুই নরপিশাচ -তুই ডাইনি__
তুই মানুষ রুপে অমানুষ-
তোর দেহে মানুষের চামড়ায়
হায়েনার মুখোশটা অতি সূক্ষ..
চোখে পড়ছে না যদিও—
রুগ্ন হাতটায় হিংস্রের থাবার দাগ লেগে আছে,
ছোট্ট নখের মাঝে শিল্পাঞ্জির নখের ধার আছে।
কোমল কন্ঠের আড়ালে সিংহের গর্জন লুকিয়ে,
তুই হয়ত টের পাস না, তোর গোলাপ টের পেয়েছে
তার সুন্দর হাস্যমুখে ভয়ের ছাপ,
তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গে, কোমল নাক,সুন্দর ললাটে
….আত্ম কান্নার রোল ভেসে ওঠে।

এমনই এক ডাইনি মা’র হস্তক্ষেপ
নিজ সন্তান হত্যা করতে হাত কাপেনি-
সেই লম্বা শিল্পাজির নখে
নিঃশেষ করিলো আজ তোমাকে-
এমনই এক জীবন্ত “ডাইনির মা’র ”
গর্ভে তুমি এসেছিলে!

Back To Top