অত্যাধিক যাত্রী এবং অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে নাজেহাল যাত্রীরা কিন্তু নিরব প্রশাসন, সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি

সাইফুল্লা লস্কর : নেই মুখে মাস্ক, নেই কোনো সামাজিক দূরত্ব মানার তাড়া, নেই কম যাত্রী নেয়ার কোনো প্রশ্ন, নেই কোনো স্বাস্থ্য সচেতনতা, আছে তো শুধু অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অঘোষিত নিয়ম। এই নিয়মেই কাবু আপামর বাঙালিরা। ঘরের থেকে একটু দূরে কোনো কোনো প্রয়োজনে যেতে হলে এখন পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ টাকা গুনতে হচ্ছে সবাইকে। এটাই এখন নিত্য দৃশ্য গ্রাম বাংলার রাস্তা ঘাটের।

একে লকডাউনের ফলে চাকুরীজীবী ছাড়া সবার পরিবারিক অর্থনীতির চাকা ঘুরছেনা বললেই চলে তখন ছোট্ট প্রয়োজনে কোথাও যেতে হলে এত বেশি ভাড়া দিতে অনেকেরই গায়ে বাধছে। তবে এ ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ নেই গাড়িচালকদের। তাদের সাফ কথা আমাদের গাড়িতে কম যাত্রী নেয়ার কথা বলা হয়েছে তাহলে বেশি ভাড়া না নিলে চলবে কিভাবে? তবে, তারা সত্যিই কি কম যাত্রী নিচ্ছেন, এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া মুশকিল। না, তবে আপনি বোঝাতেও পারবেন না কোনো অটো বা রিকশা চালককে যে তারা কিছু ভুল করছেন। তাদের আছে নিজস্ব পরিসরের মোক্ষম জবাব।

পঞ্চম দফা লকডাউন পার করে আমরা এখন আনলকের পথচারী। দেশে ক্রমশ উদ্বেগজনকভাবে ঊর্ধ্বমুখী করোনা রোগীর সংখ্যা। এরই মাঝে পঞ্চম দফা লকডাউনের শেষে দেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের কথা মাথায় রেখে আর তা বাড়াতে সাহস করেনি কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার গুলো। তবে তার পরেও দেয়া হয় আনলকের নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকার মুলভাগে চলছিল গণপরিবহনের নিয়মাবলি। যেখানে সামাজিক দূরত্বের পূর্ণ না হলেও যথাযথ খেয়াল রেখে স্বল্প যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া হয়। তবে বর্তমানে  এই স্বল্প যাত্রীর অজুহাত দিয়ে গাড়িচালকরা আগের থেকে দ্বিগুণ বা সুযোগ বুঝে তিন গুণ বা তারও বেশি ভাড়া আদায় করছেন যাত্রীদের থেকে।

এই বিষয়ে বাসন্তী ক্যানিং রুটের এক অটো চালক বলেন, “আমরা আগের মত যাত্রী পাইনা রাস্তায় তাই ভাড়া বেশি নিচ্ছি আর এ ব্যাপারে পুলিশ আমাদের কিছু বলেনা। কারণ আমাদের সব যাত্রীরা আমাদের শেষ গন্তব্যের আগেই নেমে যায় তাই ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে।” তারা নির্দেশিকা অনুযায়ী কম যাত্রী নিচ্ছেন কিনা জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন, “কলকাতার মতো নিয়ম এখানে চালু হলে আমাদের অবস্থা সঙ্গীন হয়ে যাবে তাই প্রশাসনও আমাদের কিছু বলেনা।”

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো রাস্তায় যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার কারণ। অনেকের মতে এখন গ্রামাঞ্চলে করোনা সতর্কতার কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় এখনও শুরু হয়নি তবুও যতটুকু শুরু হয়েছে তাতে উপার্জন খুবই কম। এত কম উপার্জনের জন্য বাইরে বের হলে রাস্তা খরচে বেশিরভাগটাই চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের এই হয়রানী বন্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অনেকের অভিযোগ। তাই দাবি উঠছে সরকারি হস্তক্ষেপের। সবাই বলছে সেই যখন সামাজিক দূরত্ব মানা হবে না তাহলে আমরা কেন বেশি ভাড়া দেবো?

Back To Top