পপুলার ফ্রন্ট কে নিয়ে এত বিতর্ক কেন? পপুলার ফ্রন্ট কে নিষিদ্ধ করতে চাইছে সরকার?

পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার পতাকা

সম্প্রতি ক্যা (CAA) ও এন আর সি বিরোধী আন্দোলন করে আবারও খবরের শিরোনামে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া। উত্তরপ্রদেশ সরকারের দাবী উত্তরপ্রদেশে ক্যা ও এন আর সি বিরোধী আন্দোলন হয়েছে তাঁর পিছনে রয়েছে পপুলার ফ্রন্ট। যে হিংসা ও হানাহানি চলছে সে বিষয়েও পপুলার ফ্রন্ট এর বড় ভুমিকা  রয়েছে বলে দাবী উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের।

পপুলার ফ্রন্ট কে নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে বাবরি মসজিদ রায় হওয়ার সময় সারা ভারতের বড় বড় শহরগুলি পপুলার ফ্রন্টের পোস্টারে ছেয়ে যায়। বাবরি মসজিদের জায়গাতে বাবরি মসজিদ পুনরায় নির্মাণের দাবী নিয়ে প্রত্যকে বছর তারা আন্দোলন করে থাকে বলে খবর।

হাদিয়া কান্ডেও পপুলার ফ্রন্ট এর ভুমিকাও উল্লেখ করার মত। কোর্টের রায় হাদিয়ার পক্ষে যাওয়ার পর পপুলার ফ্রন্টের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় যাতে পপুলার ফ্রন্ট দাবী করে প্রায় ১ কোটি টাকা তারা হাদিয়ার জন্য খরচ করে আইনী লড়াইয়ে।

পপুলার ফ্রন্টের সাথে সরকারের বিরোধ এই প্রথম নয়। তাই দিনকাল ডট ইন পপুলার ফ্রন্ট কে নিয়ে হিন্দুত্ববাদী সরকারের বিরোধের কারণ খোঁজার চেষ্টা করল।

২০০৬ সালে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া কেরালা, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর তিনটি সামাজিক সংগঠনকে একত্রিত করে তৈরি হয়। ২০০৬ সালে শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত তারা দেশের প্রায় ২৭টি রাজ্যে কাজ করছে। পশ্চিমবঙ্গেও পপুলার ফ্রন্ট এর কাজ শুরু নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি নামে একটি সংগঠন পপুলার ফ্রন্টের ছাতার মধ্যে এলে।

‘আমারও কিছু বলার আছে’ শিরোনামে অনুষ্ঠান পিএফআই এর

পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইট অনুযায়ী তারা বিভিন্ন সামাজিক কাজ কর্মের সাথে যুক্ত। সামাজিক কাজের মধ্যে রয়েছে  জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মেধাবী ছাত্রদের স্কলারশিপ প্রদান। স্কুল ছুট কমাতে স্কুল কিটস প্রদান থেকে মডেল ভিলেজ পরিচালনা করা যেখানে বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করা হয়। এছাড়াও গরীবদের বিভিন্ন উৎসবের সময়ে ফুড কিটস বিতরণ, অন্যায়ভাবে জেলে আটকদের আইনী সহায়তা প্রদান।

এছাড়াও পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া মুসলিমদের বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়েও আন্দোলন করে থাকে, যার মধ্যে বাবরী মসজিদ ও মুসলিমদের সংখ্যানুপাতে সংরক্ষণের দাবী অন্যতম।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে মিছিল

উত্তরপ্রদেশ সরকারের দাবী পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া রাজ্যে ক্যা আন্দোলনকে উপলক্ষ করে গুলি চালিয়েছে পুলিশের উপর, সাধারণ মানুষকে এক করে বিভিন্ন হিংসাত্মক আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। এবং সে কারণেই তারা নিষিদ্ধ করতে চায়।

উত্তরপ্রদেশের এই দাবী নস্যাত করে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইণ্ডিয়ার সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ আলি জিন্না একটি প্রেস বার্তায় জানান “সংবিধান বিরোধী আইনের ফলে দেশজুড়ে এখন মানুষ প্রতিবাদ করছে। মানুষ তাদের পরিচয়কে দূরে রেখে একই ছাতার তলায় এসে ফ্যাসিস্ট সরকারের বৈষম্যমূলক আইনের বিরোধিতা করছে। শুধুমাত্র বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই এই আন্দোলনের বিরোধিতা করছে।“

তিনি আরো জানান যে “যোগী আদিত্যনাথের পুলিশের কাজ কর্ম সারা বিশ্ব দেখেছে। নির্দোষদের কে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা, আন্দোলনকারীদের উপর নির্মম অত্যাচার, এবং সম্পদের লুন্ঠন চালানো হচ্ছে তার হিসাব ভারতবাসী অবশ্যই নেবে।“

এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয় পপুলার ফ্রন্টের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপরে যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে তার জবাব তারা আইনীভাবেই দেবে।

এর আগেও কয়েকবার পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়াকে নিষিদ্ধ করার দাবী উঠলেও উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় সরকার নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এন আই এ পপুলার ফ্রন্ট এর বিভিন্ন অফিসে তল্লাশি চালিয়ে সেরকম কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি।

Back To Top