এই যুগের যোগী ত্রেতা যুগের সার্টিফিকেট দিয়ে ফেললেন বিধানসভা ভোটের প্রচারে।
মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের পর এ বার রাজস্থানেও, ভোটের আসরে জাতপাতকে উস্কে দিলেন বিজেপির হিন্দুত্বের মুখ, গোবলয়ের বৃহত্তম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গেরুয়া বসনধারী যোগী আদিত্যনাথ! আর তার জন্য ‘রামায়ণ’কে তো ফের হাতিয়ার করলেনই, এমনকি, ‘জাত-বিচার’ করলেন হনুমানেরও! ‘দলিত’ তকমা সেঁটে দিলেন হনুমানের গায়ে! বোঝাতে চাইলেন, রাম-ভক্ত হনুমানের মতো হিন্দুদের সঙ্গে থাকাটাই দলিতদের পক্ষে শ্রেয়। বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে মালপুরা কেন্দ্রে এক জনসভায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এমন কথাই বোঝালেন জনগণকে। তিনি বলেছেন ‘‘বজরঙ্গবলী ‘দলিত’, সবচেয়ে বড় আদিবাসী, সবচেয়ে বড় দলিত। সবচেয়ে বড় বনবাসী। অনেক বঞ্চনা সয়েছে হনুমান। রাম যখন ছিলেন বনবাসে, তখন আবার রাক্ষসদের হাত থেকে স্থানীয় আদিবাসীদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন হনুমানই। ত্রেতা যুগে যে কাজটা করেছিলেন রাম।’’ বলে ফেঁসেও গিয়েছেন তিনি।
শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতী বললেন, ‘‘ঘোর অপরাধ করেছেন যোগী। বজরঙ্গবলী কবে আবার দলিত ছিলেন?’’ রাজস্থানের ‘সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভা’ আইনি নোটিস ধরিয়েছে যোগীকে। জানিয়েছে, ৩ দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। হনুমানকে শুধু ‘দলিত’ বলেই থেমে থাকেননি যোগী, ‘লোকদেবতা’, ‘বঞ্চিত’ও বলেছেন। তাতেও খেপেছেন ব্রাহ্মণরা।
জয়পুর থেকে কিছুটা দূরে মালপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের আলওয়াড়ে বিজেপি প্রার্থীর পকেটে দলিত ভোট টানার লক্ষ্যে যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, ‘‘আদিবাসী, বনবাসী, বঞ্চনার শিকার বজরঙ্গবলী (হনুমান) বরাবরই দেশের উত্তর থেক দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম সবক’টি জাতি ও সম্প্রদায়ের হাতে হাত মেলানোর চেষ্টা করেছিলেন। কারণ, সেটাই রামের ইচ্ছা ছিল। রামের সেই ইচ্ছা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরাও থামব না।’’
যোগী ওই জনসভায় এও বলেছেন, ‘‘সব রাম-ভক্তের ভোট যাবে বিজেপির পকেটে। আর কংগ্রেস পাবে শুধুই রাবণ-ভক্তদের ভোট।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বেশ ভেবেচিন্তেই যোগীকে প্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে জাতপাত ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে উস্কে দিতে। আর ওই সব নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে দিয়ে বলানো হচ্ছে শুধুই উন্নয়নের কথা।