ফেসবুক ইউটিউবের নেশা ছাড়ানোর সব থেকে কার্যকরী উপায়

~নিজাম পারভেজ

দিনকাল ডেস্কঃ বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের বিশাল একটা অংশ জুড়ে রয়েছে সামাজিক মাধ্যম। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটক সহ নানান ধরনের সামাজিক মাধ্যমগুলিতে আমাদের বেশিরভাগ সময় চলে যাচ্ছে।

অথচ এগুলো তৈরি হয়েছিল আমাদের সময় বাচানোর জন্য, কিন্তু ঘুরে সময় তো বাঁচছেই না উল্টে বেশি সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সামাজিক মাধ্যমের নেশা খুবই খারাপ একটা নেশা। যতদিন পর্যন্ত এগুলো দিয়ে আমাদের কোন উপকারে না আসছে ততদিন পর্যন্ত আমাদের সময় নষ্ট হতেই থাকবে।

ছাত্র, গৃহিণী থেবে চাকুরে সবার উপরে রয়েছে এই প্রভাব। চলুন আলোচনা করা যাক কিভাবে আমরা এই নেশা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হতে পারি।

আমি আজকে যেগুলো আলোচনা করব সেগুলো মূলত আমি নিজে চেষ্টা করেছি তারপর আমার মনে হয়েছে যে এইভাবে যদি ব্যবহার করা যায় তাহলে সামাজিক মাধ্যমের নেশা কমানো যেতে পারে।

১) ফেসবুকঃ ফেসবুক হচ্ছে সবথেকে বড় একটি সামাজিক মাধ্যম। ফেসবুকের নেশা কাটানোর প্রথম ধাপ হচ্ছে ফেসবুক অ্যাপ মোবাইল থেকে আনইন্সটল করে দেওয়া। ফেসবুক সফটওয়ার টি এমনভাবে ডিজাইন করা যে আপনি বেশি সময় কাটাতে বাধ্য। তাই এটি কে ডিলিট করে দিন এবং ফেসবুক ব্যবহার করুন অন্য কোন ব্রাউজার থেকে। গুগল ক্রোম বা ফায়ারফক্স বা ইউসি ব্রাউজারও ব্যবহার করতে পারেন। ব্রাউজারে মোবাইল m.facebook.com ব্রাউজ করুন, যদি আরেকটু নেশা কমাতে চান তাহলে mbasic.facebook.com এই ভার্সন টি ব্যবহার করুন। এটি ফেসবুকের সব থেকে সহজ ভার্সন। এখানে ভিডিও খুব কম আসবে, আসলেও প্লে হতে অনেক সময় নেবে, এছাড়া ফেসবুক অ্যাপে ব্যাক চাপলেই রিফ্রেশ হয়ে ফিড আপডেট হয়ে যায়, কিন্তু এই ভার্সনে সেটা হবে না, কিংবা ভিডিও রিকমেন্ডশন আসবে না। ফলে একসময় নতুন কোন পোস্ট না থাকায় আপনি নিজে থেকেই ফেসবুক ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন।

২) হোয়াটসঅ্যাপঃ এটিও ফেসবুকের মালিকানাধীন। হোয়াটসঅ্যাপে ঘণ্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেওয়া লোকের অভাব নেই। হোয়াটসঅ্যাপের নেশা কাটানোর প্রথম ধাপ হচ্ছে গ্রূপ থেকে বেরিয়ে যাওয়া। যে গ্রূপের প্রয়োজন নেই সেই গ্রূপ লেফট করে দিন, যেগুলো লেফট করতে পারবেন না সেগুলো কে মিউট করে দিন। গ্রূপের সব মেসেজে আপনাকে রিপ্লাই দিতে হবে এমন নয়,যেগুলো দরকার সেগুলোতেই দিন।

৩)ইউটিউবঃ  গুগলের মালিকানাধীন এই ভিডিও প্ল্যাটফর্মের কথা কারো অজানা নয়। অধিকাংশ মানুষের সব থেকে ভালো টাইমপাসের সাথী হচ্ছে ইউটিউব। গান থেকে সিনেমা, বিদেশী ধারাবাহিক  বা নাটক সব কিছুই এক ক্লিকে। তাই মোটামুটি সবাই ব্যবহার করে ইউটিউব। কিন্তু অত্যাধিক ব্যবহার নিজের জন্য কখনোই ভালো নয়। সেইজন্য ইউটিউব কোম্পানি কিছুদিন আগে একটি সিস্টেম চালু করেছে যেখানে টানা ৩০ মিনিট ইউটিউব চললে নিজে থেকে আপনাকে ব্রেক নেওয়ার জন্য বলবে। তবে সব থেকে বড় বিষয় হল নিজের কাছে। গান, সিনেমা দেখতে ভালো লাগে কিন্তু ইউটিউবে এর থেকেও বেশি অনেক কিছু আছে সেগুলোকেও খুজে দেখা উচিত। যেমন নানান ধরনের শিক্ষামূলক ভিডিও রয়েছে সেখানে রান্নার রেসিপি থেকে, গীটার চালানো, গান শেখা বা নতুন কোন ভাষা শেখা বা ছবি এডিটিং বা ভিডিও এডিটিং শেখা। শিখতে পারেন প্রোগ্রামিং লাংগুয়েজও। আন্ড্রোয়েড বা আইফোনের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা শিখতে পারেন।

ইউটিউব কে শুধু বিনোদনের জন্য না ভেবে নিজের স্কিল বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করুন। যেখানে আপনার সময়ের মূলও বাড়বে সাথে সাথে আপনারও।

এছাড়াও কিছু শিক্ষামূলক অ্যাপস ব্যবহার করতে পারেন যেমন Quora বা TED, ছাত্র হলে Khan Academy

 

আপনি মোবাইলে কতটা সময় ব্যয় করছেন তার হিসাব রাখুন। তবেই আপনি বুঝতে পারবেন কতটা সময় আপনি কাজে আর কতটা সময় শুধু এসব কাজে ব্যবহার করছেন। এজন্য Quality Time বা মোবাইল অ্যাডিকশন মিটার লিখে খুজলেই অনেক সফটওয়্যার পেয়ে যাবেন যেগুলো বলে দেবে কতটা সময় আপনি ব্যয় করছেন আপনার মোবাইলে। সফটওয়্যার গুলি একদম বিনামূল্যে।

তাই, যদি চান আপনার সময়ের মূল্য দিতে তাহলে উপরে উল্লিখিত পন্থাগুলো চেষ্টা করে দেখতেই পারেন।

যদি লেখাটি ভালো লাগে তাহলে আপনার প্রিয়জনকেও শেয়ার করুন।

লেখকের ফেসবুক

Back To Top