“আপনারা বুঝে নিন যে দুনিয়ার সবথেকে বড় অভিনেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী : প্রিয়ঙ্কা

দিনকাল ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে এক সারিতে বসালেন কংগ্রেসের পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া। উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে নির্বাচনী সভা করতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে আপনারা দুনিয়ার সবথেকে বড় অভিনেতাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়েছেন। তার থেকে তো অমিতাভ বচ্চনকে প্রধানমন্ত্রী বানালেই ভালো হতো।উনিশের লোকসভার শেষদিনের প্রচারে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। সেখানে রোড শোয়ের পর সভা করেন তিনি। সভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আপনারা বুঝে নিন যে দুনিয়ার সবথেকে বড় অভিনেতাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। এর থেকে তো আপনারা অমিতাভ বচ্চনকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দিলেই ভালো হতো। এমনিতেই দুজনের কেউই আপনাদের জন্য কিছু করত না।”

প্রিয়ঙ্কা বলেন, কেন্দ্রের কোনও প্রকল্পের সুফল খেটে খাওয়া, গরিব মানুষেরা পাননি। তাঁদের জীবনের কোনও উন্নতি হয়নি। যে কষ্ট নিয়ে তাঁরা জীবনযাপন করছিলেন, সেই কষ্ট রয়েই গিয়েছে। কংগ্রেস নেত্রী প্রশ্ন তোলেন, যদি কোনও কাজই না হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীই থাকুন আর অমিতাভ বচ্চনই থাকুন, একই ব্যাপার।কিন্তু হঠাৎ কেন মোদীর সঙ্গে তুলনায় অমিতাভের নাম টানলেন প্রিয়ঙ্কা?মির্জাপুর থেকে মাত্র ৮৫ কিলোমিটার দূরে এলাহাবাদ। প্রিয়ঙ্কার বাবা রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৮৪ সালে এই এলাহাবাদ থেকেই কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল সর্বজনবিদিত। কিন্তু বফর্স কেলেঙ্কারিতে অমিতাভ বচ্চনের নামও জড়িয়ে যাওয়ায় নিজের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তারপর থেকেই গান্ধী পরিবারের সঙ্গে বচ্চন পরিবারের দূরত্ব বাড়তে থাকে।১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর হত্যার পর দুই পরিবারের সম্পর্ক প্রায় শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে অমিতাভের স্ত্রী জয়া বচ্চন সমাজবাদী পার্টির হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হন। বিজেপি সরকারের সঙ্গে অমিতাভের সখ্যতাও বাড়তে থাকে। মোদীর রাজ্য গুজরাত পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও দেখা যায় বলিউডের এই বর্ষীয়ান অভিনেতাক।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে বফর্স কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পরে তাঁর সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছিলেন তাঁর এককালের কাছের বন্ধু অমিতাভ বচ্চন। এই ঘটনা ভালোভাবে নেয়নি গান্ধী পরিবার। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা বড় হওয়ার পরেও সেই সম্পর্ক উন্নতি হয়নি। বরং একেবারে ভেঙে গিয়েছে। অন্যদিকে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেস বারবার অভিযোগ করছে, দেশের মানুষকে লুটে নিজেদের পকেট ভরছেন বিজেপি নেতারা। মানুষের কোনও চিন্তা তাঁদের নেই। বরং নিজেদের স্বার্থ নিয়েও তাঁরা ব্যস্ত। তাই মোদীকে তুলনা করতে গিয়ে অমিতাভ বচ্চনের প্রসঙ্গ তুলে আনলেন প্রিয়ঙ্কা। দু’জনকেই একই সারিতে বসাতে চাইলেন তিনি। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হলো। একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের কাছে মোদীকে অভিনেতা হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা হলো। তেমনই অন্যদিকে অমিতাভকেও স্বার্থপর বলে কটাক্ষ করলেন প্রিয়ঙ্কা।

Back To Top