আজ বিশ্ব ‘অটিজম’ সচেতনতা দিবস’ ও কিছু কথা

~লিটন রাকিব

‘অটিজম’ এক বিশেষ ধরণের মানসিক প্রতিবন্ধকতা, যার শুরু শৈশবে কিন্তু স্থায়ীত্ব সারাজীবনের। সাধারণভাবে মানসিক প্রতিবন্ধী বলতে মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়া বা নিম্নমানের বুদ্ধিসম্পন্ন শিশুদেরি বোঝান হয় কিন্তু ‘অটিজম’ এমন একটি বিশেষ ধরণের প্রতিবন্ধকতা, যা জড়বুদ্ধি বা কমবুদ্ধি থেকে পৃথক। এই শ্রেণীর প্রতিবন্ধকতার বৈশিষ্ট হল, শিশুটির ইন্দ্রীয় সচেতনতা কমতে থাকে যার ফলে বাকি মানসিক এবং সামাজিক গুঙুলি প্রকাশিত হয় না।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, একজন অটিস্টিক শিশুর শ্রবণ যন্ত্র স্বাভাবিক থাকলেও শিশু শ্রবণ সংবেদনের সঠিক ব্যাখ্যা নাও করতে পারে। তাই শিশুটি বধির। দরশন সংবেদনেও একই রীতি অনুসরণ করে। সামনে উত্তেজক ব্যাক্তি/বস্তু থাকলেও শিশুটি প্রতিক্রিয়া করে না। ফলস্বরুপ শিশুটির সামাজিক শিক্ষা বা সাধারণ শিক্ষা কোনটাই হয় না মাত্রা ভেদে নিম্নমানের হয়ে থাকে।
সারা বিশ্বেই বেড়ে চলেছে অটিজম আক্রান্তের সংখ্যা কিন্তু সে ব্যাপারে সচেতনতার বড়ইঅভাব। আজ ২রা এপ্রিল, মঙ্গলবার বিশ্ব অটিজম দিবসে সেই কথাই মনে করিয়ে দিতে চাইছি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর সামাজিক আচরণ যেভাবে বদলানো উচিৎ, স্নায়বিক অসুখের কারণে তা হয় না। অনেক সময় মানসিক রোগ ঠিক ধরতে পারেন না অভিভাবকরা তাইও অটিজম সম্পর্কে আরো বেশি সচেতনতা প্রয়োজন। যাতে শৈশবেই একে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। বেশকিছু বৈশিষ্টের কথা এক্ষেত্রে নীচে তুলে ধরছি তার সব বৈশিষ্টই সকল শিশুর মধ্যে সমানভাবে নাও থাকতে পারে।


বৈশিষ্টগুলি হলঃ
১) সকলের মধ্যেও একাকিত্ব অনুভব করা।
২) অস্বাভাবিক খেলা। যেমন জড়বস্তু নিয়ে তাৎপর্যহীন খেলা।
৩) যে কোন বস্তু নিয়ে ঘোরান বা পাক খাওয়ানো।
৪) কোন ব্যক্তির প্রতি উদাসীন্য।
৫) অদ্ভুদ গতিবিধি এবং মুদ্রাদোষ।
৬) অস্বাভাবিক শিখন পদ্ধতি আয়ত্ত করা।
৭) স্বাভাবিক সামাজিক আচরণ না করা।
৮) বাক্‌হীনতা বা বাক্‌কল্পতা।
৯) স্থান-কাল-বাসস্থানের পরিবর্তনে অদ্ভুদ প্রতিক্রিয়া।
১০) দৃষ্টি বিনিময়ের অভাব – মানুষের বা বস্তুর সঙ্গে।
১১) অর্থহীনভাবে শব্দের প্রতিধ্বনি করা।
১২) বিশৃঙ্খল আচরণ করা।
উপরিউক্ত বৈশিষ্ট অনুযায়ী অটিস্ট্রিক শিশুর প্রকারভেদ করা হয়ে থাকে। আজ এই বিশেষ দিনে আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরও সচেতন করে তুলতে হবে যাতে অঝরে এইসব শিশু ঝরে না যায়। এদের জন্য রয়েছে বহুমুখী শিক্ষালাভের বিশেষ কর্মসূচী। রয়েছে বিশেষ বিদ্যাল্য এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকা।

লেখকঃ লেখক লিটন রাকিব বিশিষ্ট কবি এবং বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে গবেষণারত স্কলার।

Back To Top